in

বইমেলা ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, অমর একুশে বই মেলাকে ঘিরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কমিশনার বুধবার সকালে বইমেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বইমেলা অসাম্প্রদায়িক আয়োজন। এই আয়োজনকে বিভিন্ন সময় হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। অতীতে নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার ঘটনা রয়েছে। এই বিষয়টি স্পষ্টভাবে মাথায় রেখে সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। তবে বইমেলাকে ঘিরে সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই।

তিনি বলেন, আগামীকাল পহেলা ফেব্রুয়ারি। ভাষার মাস। বাঙালির প্রাণের বইমেলা ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। ‘পড়ো বই, গড়ো দেশ: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ (বই পড়ো, দেশ গড়ো: বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ)’ এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আগামীকাল বিকেল ৩ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে বই মেলার উদ্বোধন করবেন।

বই মেলা প্রাঙ্গণে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশের বইপ্রেমী মানুষ সমবেত হয়। কেবল দেশ নয়, বিদেশ থেকেও বিভিন্ন দেশের ডিপ্লোম্যাটিকরা বইমেলায় আসবেন। এটি বাঙালির বড় ঐতিহ্য। এতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক লাখ লোকের সমাগম হবে।

বই মেলার গৃহীত নিরাপত্তা সম্পর্কে কমিশনার বলেন, বইমেলার ভেতরে ও বাইরে সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ডিউটিতে নিয়োজিত থাকবে। স্ট্যান্ডবাই থাকবে সোয়াট, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড।

এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গণের কন্ট্রোল রুম থেকে মেলার ভেতরে ও চারপাশে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। সাইবার পেট্রোল ও ড্রোন পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে নজরদারি করা হবে।

তিনি বলেন, বইমেলাকে ঘিরে রয়েছে একাধিক ওয়াচ টাওয়ার। নিবিড় তদারকির মধ্য দিয়ে লেখক, প্রকাশক, পাঠক ও বই প্রেমী দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। অগ্নিনির্বাপণের জন্য থাকবে ফায়ার টেন্ডার ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা।

কমিশনার বলেন, কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেনো না ঘটে সেজন্য প্রত্যেক দর্শনার্থীকে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে হবে। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গনে থাকবে পুলিশ ব্লাড ব্যাংক, শিশুদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ ও লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড সেন্টার। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ডিএমপি’র পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সরবরাহ করা হবে।

কমিশনার বলেন, এবারের মেলায় বিশেষ একটি সুবিধা যুক্ত হয়েছে। মেট্রোরেলের একটি স্টেশন মেলার গা ঘেঁষে। তাই দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধা বাড়বে। এছাড়াও এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিটিউট গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে, এতে দর্শনার্থীদের মেলায় প্রবেশ আরও সহজ হবে।

পাঠকপ্রেমীরা নিশ্চিন্তে বইমেলায় আসবেন এবং পছন্দের বই কিনবেন বলে তিনি আশা করেন।
আইনশৃঙ্খলা অবনতি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন বইয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বই দেখার বিষয়টি বাংলা একাডেমি করে থাকে। তবে কোনো লেখা বা বিষয় পাঠকের নজরে আসলে বা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এবং সেটি নিয়ে যদি কোনো সমালোচনা হয়, তখন পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা ও প্রয়োজন হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, ডিএমপির যুগ্ম ও উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings