ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকসের সেঞ্চুরির পর তারই স্বদেশি স্পিনার মঈন আলির হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টানা চতুর্থ জয়ের স্বাদ পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মঙ্গলবার নিজেদের অষ্টম ম্যাচে কুমিল্লা ৭৩ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। শূন্যতে জীবন পেয়ে ১০৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন জ্যাকস।
বল হাতে চট্টগ্রাম ইনিংসের ১৭তম ওভারের প্রথম তিন বলে উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মঈন। বিপিএলের ইতিহাসে এটি অষ্টম হ্যাটট্রিক। এরমধ্যে বাংলাদেশের চারজন, পাকিস্তানের দুজন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের একজন বোলার হ্যাট্রিক করার কীর্তি গড়েন।
এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন দুর্দান্ত ঢাকার বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কুমিল্লাকে ৪৭ বলে ৮৬ রানের শুরু এনে দেন কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন ও জ্যাকস। এরমধ্যে মাত্র ২৬ বলে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক লিটন।
অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে চট্টগ্রামের পেসার শহিদুল ইসলামের বলে আউট হন ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩১ বলে ৬০ রান করা লিটন।
লিটনের বিদায়ে ক্রিজে আসেন আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ম্যাচ জয়ী অনবদ্য ১০৮ রান করা তাওহিদ হৃদয়। প্রথম বলেই লেগ বিফোর আউট হয়ে ডাক মারেন হৃদয়।
১১ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফিরেন চার নম্বরে নামা ইংল্যান্ডের ব্রুক গেস্ট। ১১১ রানে তৃতীয় উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন জ্যাকস ও মঈন। ব্যাট হাতে চট্টগ্রামের বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দেন তারা।
চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে ৫৩ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ১২৮ রান যোগ করেন জ্যাকস ও মঈন। শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মেরে এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েন জ্যাকস। এজন্য ৫০ বল খেলেন তিনি।
একই ওভারের চতুর্থ বলে হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান দু’বার জীবন পাওয়া মঈন। জ্যাকসের সেঞ্চুরি ও মঈনের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৩৯ রানের বড় সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। শেষ ৭ ওভারে ১১১ রান পায় কুমিল্লা। এবারের আসরে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান এবং বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় রানে রংপুর রাইডার্সের রেকর্ড স্পর্শ করলো কুমিল্লা। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম ভাইকিংসের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৩৯ রান করেছিলো রংপুর।
৫টি চার ও ১০টি ছক্কায় ৫৩ বলে ১০৮ রানে অপরাজিত থাকেন জ্যাকস। ২টি চার ও ৫টি ছক্কায় ২৪ বলে অনবদ্য ৫৩ রান করেন মঈন। চট্টগ্রামের শহিদুল ৪৯ রানে ২ উইকেট নেন।
বড় লক্ষ্যে জবাব দিতে নেমে ৪৫ বলে ৮০ রানের সূচনা করে চট্টগ্রাম। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৪ বলে ৪১ রান করা ওপেনার তানজিদ হাসানকে অষ্টম ওভারে শিকার করে কুমিল্লাকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
এরপর স্পিনার রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে পড়ে বিরতি দিয়ে উইকেট হারিয়ে ৫ উইকেটে ১১৫ রানে পরিণত হয় চট্টগ্রাম। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৩ বলে ৩৬ রান করা অস্ট্রেলিয়ার জশ ব্রাউনকে, নিউজিল্যান্ডের টম ব্রুসকে ১১ ও শাহাদাত হোসেনকে ১২ রানে আউট করেন রিশাদ। আয়ারল্যান্ডের কার্টিস ক্যাম্ফারকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি মুস্তাফিজ।
হঠাৎ চাপে পড়া চট্টগ্রামকে লড়াইয়ে ফেরাতে ষষ্ঠ উইকেটে ১৮ বলে ৪২ রান যোগ করেন অধিনায়ক শুভাগত হোম ও সৈকত আলি। আগের ম্যাচে বাউন্ডারির চাইতে ওভার বাউন্ডারি বেশি মারা সৈকত এবারও ১টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১১ বলে ৩৬ রানে আউট হন।
দলীয় ১৫৭ রানে সৈকতের আউটের পর মঈনের হ্যাটট্রিকে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম। কুমিল্লার মঈন ২৩ রানে ও রিশাদ ২২ রানে ৪টি করে উইকেট নেন।
এ জয়ে ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে আছে কুমিল্লা। ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে এগিয়ে শীর্ষে রংপুর রাইডার্স। ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকল চট্টগ্রাম।
GIPHY App Key not set. Please check settings