প্রবল বৃষ্টি ও উজানে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলে ফেনীর উত্তরাঞ্চলে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে।
এতে ‘দুর্বল’ বাঁধ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন ওই অঞ্চলের বাসিন্দারা। একই শঙ্কার কথা প্রকাশ করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদ শাহরিয়ার। তিনি জানান, উজানের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে ভাঙন সৃষ্টি হতে পারে।
সোমবার রাত ৯টায় মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, প্রতিবছর ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর, বরইয়া, ঘনিয়ামোড়া এলাকায় ভাঙন সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে। এ স্থানগুলোতে বাঁধ ভাঙলে লোকালয় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
স্থানীয়রা বলছেন, ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর, জয়পুর, দেড়পাড়া এবং ঘনিয়ামোড় এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বাঁধ ভাঙলে ফের দুর্ভোগের মুখোমুখি হবে উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম রাজু বলেন, প্রতিবার এসময় এলেই বাঁধ ভেঙে চরম দুর্ভোগে পড়েন এ অঞ্চলের মানুষরা। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাঁধে যেকোন সময় ভাঙন দেখা দিতে পারে। ত্রাণ নয়, টেকসই বাঁধ-এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের একটি দাবি।
প্রতিবছর বাঁধ ভেঙ্গে সৃষ্ট বন্যায় অবকাঠামো ও কৃষিখাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মুহুরী নদীতে টেকসই নদীতে বাঁধের দাবি এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, অবিরাম বৃষ্টি চলতে থাকে তাহলে মুহুরী নদী আরও ফুলে-ফুঁসে উঠতে পারে।
ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হারুন মজুমদার বলেন, বাঁধ ভাঙার আশঙ্কার কথা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। লোকালয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তুতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়া জানান, বাঁধে ভাঙন সৃষ্টি হয়ে লোকালয় প্লাবিত হলে তা মোকাবেলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা কাজী আবু হেনা মেহেদী জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে। তবে এখন উপরের জমিতে ৫ হেক্টর বীজতলা নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো আমন মৌসুমে ৩০০ হেক্টর বীজতলা তৈরি করা হবে। তবে আমন ধান রোপণের আরও মাসখানে দেরি থাকায় ক্ষতির তেমন সম্ভাবনা নেই।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম নিচু এলাকায় বীজতলা নির্মাণ না করে উপরের জমিতে বীজতলা তৈরি করতে কৃষকদের পরামর্শ দেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উজ্জ্বল বণিক জানান, ফুলগাজীতে উপজেলায় ৪ হাজারের বেশি পুকুর বা খামার রয়েছে। মুহুরি নদীর ভাঙন সৃষ্টি হলে ফুলগাজী ইউনিয়নের দৌলতপুর, বরইয়া বা ঘনিয়ামোড়ায় শতাধিক পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
GIPHY App Key not set. Please check settings