মিয়ানমার থেকে ১৭৩ বাংলাদেশি বুধবার (২৪ এপ্রিল) দেশে ফিরেছেন। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিজিপি, সেনা, ইমিগ্রেশনসহ ২৮৮ সদস্য ২৫ এপ্রিল ও ২৬ এপ্রিল দেশে ফিরে যাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগ এর বিশেষ উদ্যোগে মিয়ানমারের রাখাইনে কারাগারে বন্দী ও নাগরিকত্ব যাচাই হয়েছে, এমন ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক আজ বুধবার মিয়ানমার থেকে নৌপথে দেশে ফিরেছেন।
এ ছাড়া দেশটিতে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া বিজিপি, সেনা, ইমিগ্রেশন ও অন্যান্যসহ মিয়ানমারের ২৮৮ জন সদস্যের প্রত্যাবর্তন আগামীকাল ২৫ এপ্রিল ও প্রয়োজনে ২৬ এপ্রিল সম্পন্ন হবে।
প্রত্যাবাসন উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম আয়োজন করা হয়। দেশে ফেরা বাংলাদেশী নাগরিকদের নিয়ে মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইন বাংলাদেশে এসেছে। কক্সবাজার সদরের স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জেটি ঘাটে উপস্থিত থেকে আগত বাংলাদেশি নাগরিকদের অভ্যর্থনা জানান। আগামীকাল মিয়ানমারের জাহাজ চিন ডুইন মিয়ানমারের সেনা ও অন্যান্যদের নিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে।
মিয়ানমার ও বাংলাদেশের নাগরিকদের ফেরতের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একাধিক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের আলোকে দুই দেশের নাগরিকদের প্রত্যাবর্তন হচ্ছে। বাংলাদেশে অবস্থিত মিয়ানমারের দূতাবাস ও ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে মিয়ানমারের নিকট প্রত্যাবাসনের প্রস্তাব করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় উল্লেখিত নাগরিকগণের বাংলাদেশে যাচাই কার্যক্রম অতিদ্রুত শেষ করা হয়। প্রথমে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কারাভোগ শেষ করেছেন অথবা সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন, এমন ১৪৪ জন যাচাইকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠাতে সম্মত হয়। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ তৎপরতায় মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ, কারাভোগরত এবং বিচারাধীন সকল নাগরিকত্ব যাচাইকৃত বাংলাদেশিদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়। ফলে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ আরও ২৯ বাংলাদেশি নাগরিককে মুক্তি প্রদান করে। ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসের যোগাযোগ এবং সিট্যুয়েতে বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের প্রতিনিধি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সাথে এ বিষয়ে সমন্বয় সাধণ করেন।
মিয়ানমারের জাহাজযোগে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের ইমিগ্রেশন, স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম এবং মিয়ানমারের সেনা ও অন্যান্য সদস্যদের প্রেরণের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, জেলা সিভিল সার্জন ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সম্পন্ন করা হয়েছে । প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পাদনের পর বাংলাদেশি নাগরিকদের তাদের স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে।
জাহাজযোগে আগত মিয়ানমারের প্রতিনিধিবৃন্দ আজ বুধবার বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ক্যাম্পে অবস্থানরত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বিজিপি ও অন্যান্য সদস্যদের দ্রুত সনাক্তকরণ ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করবে। সেখানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমার দূতাবাস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে আগত বিজিপি সদস্যদের নিকট আশ্রয় প্রাপ্তদের হস্তান্তর করা হবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ছয় শ’র অধিক আশ্রয়প্রার্থী মিয়ানমারের বিজিপি ও সামরিক বাহিনীর সদস্যকে মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় প্রদান ও প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজিবি কর্তৃপক্ষ আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার বিজিপি, সেনা সদস্য ও অন্যান্যদের মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
GIPHY App Key not set. Please check settings