শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেওয়া ৫১১ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ৭ উইকেটে ২৬৮ রান করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। টেস্ট জিততে ম্যাচের শেষ দিন বাকী ৩ উইকেটে আরও ২৪৩ রান করতে হবে টাইগারদের।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১০২ রান। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৫৫ রানে এগিয়ে ছিলো লংকানরা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ ৩৯ ও প্রবাথ জয়সুরিয়া ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
মঙ্গলবার চতুর্থ দিন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৪১তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ম্যাথুজ। অর্ধশতকের পর বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি তিনি। সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হ্রয়ার আগে ৫টি চারে ৫৬ রান করেন ম্যাথুজ।
ম্যাথুজ ফেরার পর শ্রীলঙ্কার লিড ৫শ পার করেন জয়সুরিয়া ও বিশ্ব ফার্নান্দো। ৪০ ওভার শেষে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে ইনিংস ঘোষনা করে শ্রীলঙ্কা। এতে সিলেটের প্রথম টেস্টের মতই বাংলাদেশকে ৫১১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দেয় লংকানরা। জয়সুরিয়া ২৮ ও বিশ্ব ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ৬৫ রানে ৪টি, খালেদ আহমেদ ৩৪ রানে ২টি ও সাকিব ৩৯ রানে ১টি উইকেট নেন।
সিলেট টেস্টের মত ৫১১ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুটা ভালই করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। বিনা উইকেটে ৩১ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান তারা। বিরতি থেকে ফেরার পর দলীয় ৩৭ রানে শ্রীলংকার স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন ৩টি চারে ২৪ রান করা জয়।
সতীর্থকে হারানোর পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি প্রথম ইনিংসে হাফ-সেঞ্চুরি করা জাকির। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন ১৯ রান করা জাকির।
৫১ রানে ২ উইকেট পতনের পর শ্রীলংকার বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও মোমিনুল হক। হাফ-সেঞ্চুরির পথে হাঁটতে থাকা জুটিতে ভাঙ্গন ধরান পেসার লাহিরু কুমারা। দারুন এক ডেলিভারিতে ২টি চারে ২০ রান করা নাজমুলকে বোল্ড করেন কুমারা।
ওয়ানডে মেজাজে খেলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৮তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেওয়ার পর জয়সুরিয়ার বলে সুইপ করে ক্যাচ দিয়ে আউট হন মোমিনুল। ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫৬ বলে ৫০ রান করেন মোমিনুল।
মোমিনুলের বিদায়ে জুটি বাঁধেন সাকিব ও লিটন দাস। সাবধানে খেলে জুটিতে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে উইকেটে থিতু হয়ে গিয়েছিলেন দু’জনে। এই জুটি ভাঙ্গতে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মত বল হাতে কামিন্দু মেন্ডিসকে আক্রমনে আনেন শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া। নিজের চতুর্থ ওভারে সাকিবকে ফিরিয়ে সাফল্য পেয়ে যান কামিন্দু। ৩টি চারে ৩৬ রান করেন সাকিব।
সাকিব ফেরার ১৯ বল পর সাজঘরে ফিরেন লিটন। কুমারার দ্বিতীয় শিকার হন ৪টি চারে ৩৮ রান করা লিটন। ১৯৭ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে আজই হারের মুখে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় জুটি বেঁধে ম্যাচে এই সিরিজে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের রান ২শ পার করেন শাহাদাত হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজ। তাদের ৫৪ বলে ৪৬ রানের জুটিতে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে গড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। ১৫ রান করা শাহাদাতকে শিকার করে শ্রীলঙ্কাকে আবারও ব্রেক-থ্রু এনে দেন কামিন্দু।
এরপর দিনের বাকী ৩৩ বল বিপদ ছাড়া পার করে ম্যাচটি পঞ্চম দিনে নিয়ে যান মিরাজ ও তাইজুল। মিরাজ ৪৪ ও তাইজুল ১০ রানে অপরাজিত আছেন। শ্রীলঙ্কার কুমারা-জয়সুরিয়া ও কামিন্দু ২টি করে উইকেট নেন।
GIPHY App Key not set. Please check settings