in

শশুরবাড়ির সম্পদ আত্মসাৎ, কোটি টাকার সরকারি ক্ষতিপূরণ আত্মসাৎ ও মামলাবাজির অভিযোগে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

শশুরবাড়ির জমি আত্মসাৎ, মিথ্যা মামলা, ভাড়াটিয়ার মালামাল আত্মসাৎ এবং সরকারি ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা করিম সাহেবের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, “করিম সাহেবের কাছে সততা বা মানবিকতার কোনো মূল্য নেই। সম্পদ আত্মসাৎ আর মিথ্যা মামলা তাঁর নেশা। মামলার মাধ্যমে অন্যকে হয়রানি করাকে তিনি শেষ বয়সে পেশা বানিয়ে নিয়েছেন। মামলাবাজির এই খেলায় করিম সাহেব যেন এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ পান।”

চাকরি থেকে অবসরের পর সম্পদ আত্মসাৎকেই জীবিকা বানিয়েছেন করিম সাহেব। প্রায় তিন দশক আগে তিনি একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে অবসর নেন। এরপর বাড্ডায় একটি জমি ক্রয় করেছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। তবে ১৯৯৭ সালে শশুরের মৃত্যু পর থেকেই শশুরবাড়ির সম্পত্তি নিয়ে আত্মসাৎ ও মামলা-মোকদ্দমায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

অভিযোগ ১: গ্রামে ৭০০ শতাংশ জমি আত্মসাৎ

অভিযোগ রয়েছে, গ্রামের প্রায় ৭০০ শতাংশ জমি কোনো ভাগ-বাটোয়ারার সুযোগ না দিয়েই জাল দলিল ও অসৎ উপায়ে আত্মসাৎ করেন করিম সাহেব। মৃত স্ত্রীর আপন ভাগিনাকে, যিনি প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তাকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেল খাটান। ফলে প্রকৃত মালিকেরা নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

একজন ভুক্তভোগী বলেন—
“প্রকৃত ওয়ারিশ হয়েও আমরা আমাদের জমি পাইনি। মামলায় জড়িয়ে ও জেল খাটিয়ে আমাদের জমি আত্মসাৎ করেছেন করিম সাহেব। বাধ্য হয়ে আমি আমার প্রাপ্য সম্পত্তির আশা ছেড়ে দিয়েছি।”

অভিযোগ ২: বসুন্ধরায় ভাড়াটিয়ার মালামাল আত্মসাৎ

রাজধানীর বসুন্ধরার একটি দোকান ভাড়া নিয়ে বিরোধের জেরে ভাড়াটিয়া আজিজকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেলে পাঠান করিম সাহেব। অভিযোগ, এ সুযোগে তিনি প্রায় ৮৪ লাখ টাকার মালামাল, আসবাবপত্র ও সজ্জাসামগ্রী আত্মসাৎ করেন। পরে সেই দোকান আত্মসাৎ করে নিজেই ব্যবসা শুরু করেন। আজ নিঃস্ব আজিজ বিচার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন।

অভিযোগ ৩: সরকারি ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাৎ

সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো, শশুরবাড়ির সরকারি ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন করিম সাহেব। কোনো রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টন ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে এই টাকা তোলেন বলে দাবি করেছেন প্রকৃত উত্তরাধিকারীরা। তবে তাঁরা মিথ্যা মামলার ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি।

অভিযোগ ৪: আত্মীয়দের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা

অভিযোগ আছে, দোকান ও জমি আত্মসাতের জন্য নিকট আত্মীয়দের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা করেছেন করিম সাহেব। নিজের অসুস্থ শালির ছেলেকে প্রাপ্য অংশ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মামলা মীমাংসা করিয়ে নিলেও পরবর্তীতে তাকেও মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

‎পরিশেষে রাজধানীর বসুন্ধরা, জগন্নাথপুর এলাকায় স্থানীয় এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে জানা যায় এলাকায় কোনো বাড়িয়ালার এতো অভিযোগ নেই যেটা করিম সাহেবের বিরুদ্ধে রয়েছে। উনি একজন মামলাবাজ বললেও ভুল হবে না। করোনা আক্রান্ত স্ত্রীর মৃতদেহ বহনকারী নিকটতম আত্বীয় কেউ করিম সাহেব তার সার্থে মিথ্যা মামলা দিতে দ্বিধা বোধ কারননি।করিম সাহেবের এইসব অসামাজিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ড এর বিষয় কথা বলতে গিয়ে এলাকাবাসীও বিব্রত।

‎বিশেষজ্ঞদের মতামত, ‎ভূমি আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো জমি সকল ওয়ারিস গনের উপস্থিতিতে বন্টন ছাড়াই এককভাবে ভোগদখল কিংবা বিক্রি আইনত বৈধ নয়। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল এবং সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করলে তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এ বিষয়ে করিম সাহেবের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings