যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে দ্বিতীয় দফায় আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দেশে ফিরেছেন ৬৫ বাংলাদেশি। এ নিয়ে লেবানন থেকে ১১৯ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেন, দুই নবজাতকসহ মোট ৬৫ লেবানন প্রবাসী তারা সৌদি আরবের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে (এসভি ৮১০) জেদ্দায় যাত্রবিরতির পর সন্ধ্যা ৫টা ৩৪ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
বাংলাদেশি নাগরিকদের বহনকারী বিমানটি বৈরুতের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে বৈরুত রফিক হারিরি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে জেদ্দায় পৌঁছে এবং জেদ্দা থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফায় আরো ৩১ বাংলাদেশি দেশে ফিরবেন।
বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, লেবাননের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে তৃতীয় দফায় দেশে ফেরার জন্য রফিক হারারি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দায় যাবেন ৩১ বাংলাদেশি। সেখান থেকে তাদের বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।
লেবানন থেকে দেশে ফিরতে মোট ১ হাজার ৮০০ বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। তাদের প্রত্যেককে পর্যায়ক্রমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
এর আগে সোমবার লেবাননে আটকা পড়া ৫৪ জন বাংলাদেশি নাগরিকের প্রথম দলটি ২১ অক্টোবর সোমবার সন্ধ্যায় দেশে ফিরে আসেন।
লেবাননে চলমান সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা সমন্বয় করা হচ্ছে।
সোমবার আইওএম বাংলাদেশ জানায়, লেবাননে সংঘাত বাড়ার প্রেক্ষিতে আইওএম-ইউএন মাইগ্রেশন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় লেবানন থেকে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে সরকারের সাথে সহযোগিতা করছে এবং দেশে আগমনের সাথে সাথে তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছে।
লেবাননে আনুমানিক ৭০ হাজার থেকে এক লাখ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। তবে এর মধ্যে প্রায় ১৮ শ’ জন দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
লেবাননে আটকে পড়া বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার সুবিধার্থে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
এর আগে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে বাংলাদেশ দূতাবাস আগ্রহী নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের জন্য তালিকাভুক্ত হতে উৎসাহিত করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
পরে দূতাবাস জানায়, লেবাননে চলমান যুদ্ধপরিস্থিতির কারণে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় দেশে যেতে দূতাবাস বরাবর আবেদন করেছেন এবং যাদের পাসপোর্ট, আকামাসহ আবশ্যক ট্রাভেল ডকুমেন্টস প্রস্তুত রয়েছে, তাদের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দূতাবাসের ব্যবস্থাপনায় দেশে প্রেরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সোমবার সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে লেবানন থেকে প্রথম দফায় ফেরত আসা ৫৪ বাংলাদেশির খোঁজ-খবর নিতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা. আসিফ নজরুল।
এ সময় আসিফ নজরুল বলেন, আমরা দেখবো ফিরে যারা আসছেন তাদের পুনর্বাসন করা যায় কি না। লেবাননের পরিস্থিতি ঠিক হলে ওনারা আবার যাবেন। আমরা এখানে ওনাদেরকে ছেড়ে দেব না। আমরা দেশে অথবা বিদেশে পুনর্বাসনের চেষ্টা করব।
প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, লেবাননে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে যত টাকা প্রয়োজন খরচ করা হবে। আইওএম-এর সহায়তায় আমরা সবাইকেই বিনা খরচে নিয়ে আসব।
আসিফ নজরুল বলেন, রেমিট্যান্সযোদ্ধা যারা দেশে আসছেন আমরা তাদেরকে ভিআইপি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রবাসীদের এই সেবা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অচিরেই আমরা প্রবাসীদের জন্য লাউঞ্জ তৈরি করছি, দুই সপ্তাহের মতো লাগবে। আমরা আশা করি বড় অনুষ্ঠান করে উদ্বোধন করতে পারব।
GIPHY App Key not set. Please check settings