in

যথাসময়ে নির্বাচন, খুনিদের সঙ্গে সংলাপ নয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং কেউ তা ঠেকাতে পারবে না।

তিনি আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্রের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, খুনিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ হবে না।

তিনি বলেন, ‘খুনিদের সঙ্গে কোনো সংলাপ বা আলোচনা হবে না এবং বাংলাদেশের জনগণও তা চায় না। আর আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে এবং কেউ তা ঠেকাতে পারবে না।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে তার সাম্প্রতিক বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফর সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন।

গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগদানের জন্য ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবর এই সফর করেন প্রধানমন্ত্রী।
নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখার বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা কাজ করবে।

তিনি বলেন, আরপিও অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রিসভা তাদের রুটিন কাজ করবে এবং মন্ত্রীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণার সময় সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আন্দোলনের নামে বিএনপির সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেন, যাতে একজন পুলিশ কনস্টেবলকে নির্মমভাবে হত্যা এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্য এবং ৪৫ জন সাংবাদিককে অমানবিক নির্যাতন করা হয়।

তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) পুলিশ হাসপাতালেও হামলা করেছে এবং সেখানেও ইসরায়েলিদের মতো (ফিলিস্তিনের ওপর হামলা) মানুষ হত্যা করেছে।’

‘বিএনপি ও ইসরায়েলের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই কারণ হামলার বর্বরতা একই ছিল,’ যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশকে হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। আমি বলব এসব কাজ থেকে তাদের বিরত থাকা উচিত। এতে রাজনৈতিকভাবে তাদেরই ক্ষতি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, আর নির্বাচনের ব্যাপারে যেটা আমার ধারণা, এরা আসলে নির্বাচন চায় না। এরা একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। তিনি এসব সন্ত্রাসীদের উচিত শিক্ষা দেওয়াও প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেন।

বিশেষ ট্রাইব্যুনালের অধীনে তাদের বিচারের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় আনার জন্য আমরা আলোচনা করব।

তিনি বলেন, ‘তারা জঘন্য কাজ বন্ধ না করলে তাদের এই ধরনের অপরাধমূলক কাজের পরিণতি ভোগ করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের এদের সঙ্গে আমরা যতই ভালো ব্যবহার করি না কেন এদের কখনই স্বভাব বদলাবে না। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদে এরা বিশ্বাস করে। কারণ, অবৈধভাবে অস্ত্র হাতে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে এদের জন্ম। কাজেই এরা ঐটাই (সন্ত্রাস) ভাল বোঝে, আর কিছু নয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসলে মানুষকে কষ্ট দেওয়াটাই এদের চরিত্র। কাজেই এখানে আমার বলার কিছু নেই, আন্তর্জাতিকভাবে যেখানেই গিয়েছি সকলেই বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। একমাত্র দুঃখে পড়েছে বিএনপি আর জামায়াত জোট।

তিনি বলেন, বিএনপি হচ্ছে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সেই সন্ত্রাসীদের কীভাবে শিক্ষা দিতে হবে সেই শিক্ষাটাই এখন আমাদের দেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আর সেটাই আমরা দেব। এদের জন্য এই দেশটা ধ্বংস হোক সেটা সহ্য করা যাবে না।

বিএনপি’র সন্ত্রাসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের মত তাঁর সরকার সহযোগিতা করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর লিখিত ভাষণে তাঁর ব্রাসেলস সফরকে ‘অত্যন্ত সফল’ উল্লেখ করে বলেন, “এই সফরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে অংশীদারিত্ব একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কাজী জাফরুল্লাহও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে ২৮ ও ২৯ অক্টোবর বিএনপি’র সন্ত্রাস-নৈরাজ্য ও প্রকাশ্যে পিটিয়ে পুলিশ হত্যার ভিডিও ফুটেজও প্রদর্শিত হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings