in

ফ্রান্সে ৩ মাসেই শেষ হচ্ছে বার্নিয়ে সরকারের মেয়াদ!

সাইফুল ইসলাম রনি

ক্ষমতায় আসার মাত্র তিন মাসের মাথায় শেষ হতে যাচ্ছে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে সরকারের সময়কাল।

ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দলের নেত্রী মেরিন ল্য পেন সোমবার নিশ্চিত করেছেন যে তার দল ফরাসি সংসদে প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে।

বার্নিয়ের বিতর্কিত সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট পাস করতে সংসদের নিম্নকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোট এড়িয়ে সংবিধানের ৪৯.৩ ধারা প্রয়োগের সিদ্ধান্তের পর ল্য পেন সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই ঘোষণা দেন।

ল্য পেন আইনটি “ফরাসি জনগণের প্রতি অত্যন্ত অন্যায্য” বলে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিচ্ছি এবং আমরা সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেব।”

তিনি আরও বলেন, আরএন সংসদ সদস্যরা যে কোনো পক্ষ থেকে আসা অনাস্থা প্রস্তাব সমর্থন করবেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে তারা বামপন্থী গোষ্ঠীর অনাস্থা প্রস্তাব এবং নিজেদের প্রস্তাব উভয়েই ভোট দেবেন।

এছাড়া, সরকার বাজেটে কিছু সংশোধনী করলেও, পেনশন আংশিকভাবে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় না করার বিষয়ে আরএন-এর চূড়ান্ত দাবিটি প্রত্যাখ্যান করেছেন বার্নিয়ে।

অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া

ডানপন্থী রিপাবলিকান দলের নেতা লরেন্ট ওয়াকিয়েজ অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিতে সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য অথবা বিশৃঙ্খলার জন্য ভোট দিন।”

বামপন্থী দল লা ফ্রঁস ইনসুমিজ (এলএফআই)-এর নেতা ম্যাথিল্ড পানো ৪৯.৩ ধারা ব্যবহারের সমালোচনা করে বলেন, “আমরা আর এই কর্তৃত্ববাদ মেনে নেব না।” তিনি নিশ্চিত করেছেন যে নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনপিএফ) অবশ্যই অনাস্থা প্রস্তাব আনবে।

পরিবেশবাদী ও সামাজিক দলও প্রস্তাবটির সমর্থন নিশ্চিত করেছে। দলের সভাপতি সিয়েরেল শাতেলান বলেন, “যে সরকারের কোনো সমর্থন নেই, তার অস্থিরতা বন্ধ করতে হবে।”

এদিকে, সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা বোরিস ভালো বাজেটকে “খুবই খারাপ বাজেট” বলে অভিহিত করেছেন এবং সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি তার “ক্ষোভ” ও “উদ্বেগ” প্রকাশ করেছেন।

রাজনৈতিক অস্থিরতার সপ্তাহ

মঙ্গলবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটের অভাবে বার্নিয়ের ৪৯.৩ ধারা প্রয়োগের সিদ্ধান্তের কারণে সংসদীয় বিতর্ক স্থগিত করা হয়।

বুধবার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এবং ভোট অনুষ্ঠিত হবে। যদি প্রস্তাবটি পাশ হয়, তাহলে বার্নিয়ের সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। এক্ষেত্রে মন্ত্রীরা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন এবং জরুরি আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবেন।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে পরে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে, যদিও এ বিষয়ে সংবিধানে নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings