in

দ্বিতীয় দিন শেষে ১০১ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে ২০২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দিন শেষে ৩ উইকেটে ১০১ রান করেছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে হাতে নিয়ে ১০১ রানে পিছিয়ে আছে টাইগাররা।

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১০৬ রানের জবাবে কাইল ভেরেনির সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৩০৮ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২০২ রানের লিড পায় প্রোটিয়ারা। ভেরেনি ১১৪ রান করেন।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হবার পর ব্যাট করতে নেমে দিন শেষে ৬ উইকেটে ১৪০ রান করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪ রানে এগিয়ে ছিলো প্রোটিয়ারা। ভেরেনি ১৮ ও ওয়াইন মুল্ডার ১৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ৩২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দিনের খেলা শেষ করেছিলেন ভেরেনি ও মুল্ডার।

দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেও বাংলাদেশ বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলে জুটিতে শতরান পূর্ণ করেন ভেরেনি ও মুল্ডার। এসময় টেস্টে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন ভেরেনি।

ইনিংসের ৬০তম ওভারে বাংলাদেশ স্পিনার নাইম হাসানের বলে শর্ট লেগে মোমিনুল হকের হাতে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে জীবন পেয়ে টেস্টে প্রথম অর্ধশতক করেন মুল্ডার। ৬৫তম ওভারে বাংলাদেশকে জোড়া সাফল্য এনে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। ওভারের পঞ্চম বলে সাদমান ইসলামের ক্যাচে মুল্ডারকে বিদায় দেন হাসান। ৮টি চারে ১১২ বলে ৫৪ রান করেন মুল্ডার। পরের ডেলিভারিতে রিভার্স সুইংয়ে কেশব মহারাজকে বোল্ড করেন হাসান। হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হাসান।

সপ্তম উইকেটে ভেরেনি ও মুল্ডার ২০০ বলে ১১৯ রানের জুটি গড়েন। টেস্টে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রান। আগেরটি ছিলো ২০২২ সালে। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে সপ্তম উইকেটে ৮০ রান যোগ করেছিলেন মহারাজ ও মুল্ডার।

এছাড়াও সপ্তম বা পরের দিকের উইকেট বিবেচনায় এশিয়ার মাটিতে এটি দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড প্রোটিয়াদের সাবেক দুই ক্রিকেটার গ্যারি কার্স্টেন ও প্যাট সিমক্স জুটির দখলে। ১৯৯৭ সালে ফয়সালাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে ১২৪ রান করেছিলেন তারা।

দলীয় ২২৭ রানে অষ্টম উইকেট পতনের পর ড্যান পিটকে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন ভেরেনি। অষ্টম উইকেটে ৬৬ রানের জুটি গড়ার পথে ১৯ ম্যাচে টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান ভেরেনি। ২০২২ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।

এশিয়ার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে শতক করলেন ভেরেনি। আগের দু’জন ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও কুইন্টন ডি কক। ২০১৩ সালে দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ডি ভিলিয়ার্স এবং ২০১৯ সালে বিশাখাপত্তমে ভারতের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়েছিলেন ডি কক।

ভেরেনির সেঞ্চুরির পর মিরাজের প্রথম শিকার হন ২টি চারে ৩২ রান করা পিট। এরপর শেষ উইকেটে কাগিসো রাবাদার সাথে ১৫ রান যোগ করে ভেরেনি।

ব্যক্তিগত ১১৪ রানে ভেরেনিকে স্টাম্প আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস ৩০৮ রানে শেষ করেন মিরাজ। ১৪৪ বল খেলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন ভেরেনি। ২ রানে অপরাজিত থাকেন রাবাদা।

তাইজুল ইসলাম ১২২ রানে ৫টি, হাসান ৬৬ রানে ৩টি এবং মিরাজ ৬৩ রানে ২ উইকেট নেন। ম্যাচের প্রথম দিনই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল।

২০২ রানের বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে নেমে তৃতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কাগিসো রাবাদার বলে টনি ডি জর্জিকে ক্যাচ দিয়ে ১ রানে আউট হন ওপেনার সাদমান ইসলাম। একই ওভারে তৃতীয় স্লিপে মুল্ডারকে ক্যাচ দিয়ে রাবাদার দ্বিতীয় শিকার হয়ে শূন্য হাতে সাজঘরে ফিরেন মোমিনুল হক।

৪ রানে ২ উইকেট পতনের পর তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির জুটিতে সফলও হন তারা। ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৫ রানের জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হন জয় ও শান্ত।

মহারাজের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন শান্ত। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৯ বলে ২৩ রান করেন টাইগার দলনেতা।

অধিনায়ক ফেরার পর জয়কে নিয়ে ৪২ রানের অপরাজিত জুটিতে দিনের খেলা শেষ করেন মুশফিকুর রহিম। আলো স্বল্পতার কারনে প্রায় ১৫ ওভার বাকী থাকতে দিনের খেলা শেষ হয়।

জয় ৮০ বল খেলে ৫টি বাউন্ডারিতে ৩৮ এবং মুশফিক ৩টি চারে ২৬ বলে ৩১ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। এই ইনিংস খেলার পথে বাংলাদেশের প্রথম ও বিশে^র ৭৪তম ব্যাটার হিসেবে টেস্টে ৬ হাজার রানের ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন মুশি।

রাবাদা ২টি ও মহারাজ ১টি উইকেট নেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১০৬/১০, ৪০.১ ওভার (জয় ৩০, তাইজুল ১৬, মুল্ডার ৩/২২)।
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস : ৩০৮/১০, ৮৮.৪ ওভার (ভেরেনি ১১৪, মুল্ডার ৫৪, তাইজুল ৫/১২২)।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ১০১/৩, ২৭.১ ওভার (জয় ৩৮, মুশফিক ৩১*, রাবাদা ২/১০)।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings