তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে আনা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার এই আবেদন করা হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ যে পাঁচ ব্যক্তি এই রিভিউ আবেদন করেছেন তারা হলেন- তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে। সে সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে এডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট এই রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা হয়।
তবে ত্রয়োদশ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিমউল্লাহসহ অন্যরা ১৯৯৮ সালে হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রায় দেয় হাইকোর্ট। সে রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। এই আপিল মঞ্জুর করে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের পর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং চলতি ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়।
এর মধ্যে ২০১৪ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদেরকে সমর্থিত কিছু দল ছাড়া বিএনপি, জামায়াতসহ অধিকাংশ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করে।
২০১৮ সালের নির্বাচন শুরুর আগেই ব্যালটে সিল মেরে নির্বাচন সম্পন্নের অভিযোগ ছিল। এই তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ দাবি জানিয়ে আসছিল।
GIPHY App Key not set. Please check settings