চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে। একে অপরকে নিয়ে আপত্তিকর ও অসম্মানজনক মন্তব্য করার মধ্যে যেন মেতে আছেন। কখনো ইঙ্গিতে, কখনো সরাসরি। যেন কোনোভাবেই ‘আমাকে’ হারলে চলবে না। এগিয়ে থাকতেই হবে, এমন নীতিতে চলছেন দুজনে।
তেমনটাই দেখা যাচ্ছে কয়েক দিন ধরে। অপু ও বুবলী দুজনেরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যথারীতি শাকিব খান। দুজনেই শাকিব ও তার পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক আছে, এমনটা জাহির করতেই এ ধরনের কথাবার্তা বলছেন, চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তা-ই বলছেন।
গত ঈদে মুক্তি পায় শবনম বুবলী অভিনীত ‘রিভেঞ্জ’ ছবিটি। একই সময়ে মুক্তি পায় শাকিব খানের ‘তুফান’সহ আরও কয়েকটি ছবি। কিন্তু ঈদে মুক্তি পাওয়া বুবলীর ‘রিভেঞ্জ’ ছবিটি ব্যবসায়িকভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে। এর কারণ হিসেবে ছবির পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল অভিযোগের তির তাক করেন নায়িকা শবনম বুবলী ও নায়ক রোশানের দিকে। শুধু তা-ই নয়, পরিচালক তাঁর পরের ছবি ‘বিট্রে’ থেকে বাদ দেন বুবলীকে।
‘রিভেঞ্জ’ মুক্তির কয়েক দিন পর মোহাম্মদ ইকবাল গণমাধ্যমে দাবি করেন, স্ত্রী হিসেবে শাকিবের ‘তুফান’ ছবিকে পরোক্ষভাবে সাপোর্ট করতে প্রচারণায় যাননি বুবলী। ইকবালের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বুবলীর বক্তব্য ছিল এ রকম, ‘আমার পরিবার বলেন, সহশিল্পী বলেন, স্বামী বলেন এবং সব সম্পর্কের ঊর্ধ্বে আমার সন্তানের বাবা বলেন, তাঁকে নিয়ে যদি কোনো ব্যক্তি অসম্মানজনক কোনো মন্তব্য করেন, আমি অবশ্যই সেই ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলব। যেদিন থেকে দেখেছি, শাকিব খানকে নিয়ে ইকবাল ভাই আপত্তিকর মন্তব্য শুরু করলেন, তখন থেকেই আমি তাকে এড়িয়ে চলি।’
শাকিব খানকে নিয়ে বুবলীর এমন মন্তব্য যে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি অপু বিশ্বাস, গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার প্রমাণ পাওয়া যায়। বুবলীর এমন মন্তব্যকে হাস্যকর আখ্যা দিয়েছেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেছেন, ‘নিজে ছবি থেকে বাদ পড়ে শাকিবকে দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন তিনি। দুর্বল “গেম প্ল্যান”। ছবি থেকে বাদ না পড়লে শাকিবের প্রতি দরদ দেখানো এমন কোনো বাক্য ব্যবহার করতেন না। আসলে সবখানে শাকিব খানের নাম মুখে নিয়ে উনি ক্লান্ত হয়ে গেছেন।’
পাল্টা প্রশ্নে অপু বলেন, ‘উনি শাকিব খানের সম্মান নিয়ে কথা বলেন? যখন “প্রিয়তমা” সিনেমার প্রচারে গিয়ে শাকিব খানকে নিয়ে অভিনেতা আফরান নিশো নেতিবাচক কথা বললেন, তখন উনার (বুবলী) মুখে শোনা গেল সেই নিশোর প্রশংসা। ওই সময় কীভাবে শাকিবকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করা একজন মানুষের পক্ষে সাফাই গাইলেন তিনি!’
অপুর কথার পরিপ্রেক্ষিতে বুবলী গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে বলেন, ‘শাকিব খান আমার পরিবার। তার নাম আমি সব সময় নিয়েছি এবং সারা জীবন নেব। পরিবারের মানুষের নাম নিতে কেউ কখনো ক্লান্ত হয় না। যাদের স্বার্থ থাকে, তারা ক্লান্ত হয়।’
বুবলী আরও বলেন, ‘যে মহিলা এসব বলছে, সে কে? যিনি ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো সব সময় আমাদের মাঝখানে তিড়িংবিড়িং করেন। নিজের মতো বানানো নানা মিথ্যা রচনা বলেন সারাক্ষণ। সবচেয়ে হাস্যকর কথা হলো, উনি তাঁর নিশ্বাসের থেকেও বুবলী নামটা বেশি নেন। তাঁর সব জায়গায় শুধু বুবলী বুবলী। তিনি ভাইরাল হওয়ার জন্য এমন কিছু নেই, যা করছেন না। বুবলী নাম নিতে নিতে এমনই মানসিক রোগী হয়ে গিয়েছেন। সেটা আড্ডা, সহকর্মী, টেলিভিশন, ইউটিউব—যেখানেই হোক, তাঁর মুখে শুধু বুবলী আর বুবলী। কোথাও গেলে তাঁদের শিখিয়ে দেন আমার নাম নিয়ে প্রশ্ন করতে, যেন উনি একটু ভাইরাল হন। আমি আর আমার ছেলে এখন তাঁর একমাত্র ক্যারিয়ার আলোচনায় থাকার। এমনকি জাতীয় টেলিভিশন পর্দায় কী সব উদাহরণ দিচ্ছেন, যার কোনো মানেই নেই! তার সঙ্গে কী কী নোংরা আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করছে, যেটা খুব লজ্জাজনক। সব সময় তার মুখে দুর্গন্ধজনক শব্দগুলো থাকে, তার কারণ তাঁর ভেতরটাও এ রকম।’
গত বছরের মে মাসে গণমাধ্যমে বুবলীও বলেছিলেন, শাকিব খানের নাম তিনি আর মুখে আনতে চান না। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘উনি (শাকিব খান) নিজেকে সুপারস্টার হিসেবে দাবি করেন, আমি নামটি উচ্চারণ করতে চাই না, কোনো ইচ্ছাই নেই। কারণ, উনি বারবার বলেছেন, আমি তাঁকে শেল্টার হিসেবে দেখছি। একজন সন্তানের মা, স্ত্রী তো স্বামীকেই শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করবেন। এটা কি আমার ভুল হয়েছে? এ কারণে আমি তাঁর নাম আর মুখে আনতে চাই না। আমি উনাকে নিয়ে কথাও বলতে চাই না।’ বুবলী তখন আরও বলেছিলেন, ‘তিনি সম্পর্ক রাখতে চান বা না-চান এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমরা বসে কথা বলতে পারি। বাইরের মানুষক জানানোটা সমাধান নয়। আমি আমার জায়গা থেকে সংসার করতে চেয়েছি, সেটাই যদি ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি কাউকে অপমান করতে চাই না। তাঁকে সম্মান দিয়েই থাকতে চাই।’
এদিকে এ বছরের এপ্রিলে শাকিব খানের পরিবার সূত্রে জানা যায়, পাত্রী খুঁজছে পরিবার! শাকিবের বাসায় ঢুকতে মানা অপু-বুবলীর। এদিকে শাকিব খানও গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলী—দুজনই তাঁর কাছে এখন অতীত। তারপরও নানা সময়ে দুজনই টেলিভিশন, অনলাইন, প্রিন্টসহ নানা জায়গায় শাকিব খানকে জড়িয়ে আলোচনা করেন। বাচ্চাদের সামনে রেখে দুজনই শাকিব প্রসঙ্গে এনে নানা কথা বলেন তাঁরা। শাকিবের প্রসঙ্গে কথা বলা নিয়ে সাবেক এই দুই স্ত্রী নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্বে জড়ান কখনো কখনো। দুজনের এমন ঘটনায় নানা সময় শাকিব বিরক্ত হন। বিরক্ত হন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।
GIPHY App Key not set. Please check settings