in

সীমান্তে আতঙ্ক, মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার শেলে বাংলাদেশে নিহত ২

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলের আঘাতে এক বাংলাদেশি নারীসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। নিহত নারী জলপাইতলী গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা বেগম (৪৫)। আর রোহিঙ্গা ব্যক্তির নাম নবী হোছেন (৭০)।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন জানান।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি আব্দুল মান্নান জানান, নিহত নারীর নাম হোসনে আরা বেগম। অন্যজন রোহিঙ্গা পুরুষ তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, বেলা পৌনে তিনটার দিকে রোহিঙ্গা ব্যক্তিকে দুপুরের খাবার দেওয়ার জন্য রান্নাঘরে যান হোসনে আরা। তখন মর্টারশেলটি এসে রান্নাঘরের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।

ঘুমধুম ফাঁড়ির ইনচার্জ মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভূঁইয়া জানান, নিহত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে রোহিঙ্গা ব্যক্তির মরদেহ ঘটনাস্থলেই আছে।
এদিকে তুমব্রু সীমান্তের তিনটি গ্রাম এখনো মানবশূন্য রয়েছে। কোনার পাড়া, মাঝের পাড়া, বাজার পাড়া এলাকার বাসিন্দারা নিজ গ্রাম ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় উঠেছেন। কোনার পাড়ার বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ জানান, ঘরের কোন জিনিসপত্র তারা নিয়ে আসতে পারেনি। গোলাগুলি এখনো থামেনি। অনেক ভয়ে আছি।

ভাজবুনিয়া সীমান্তের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, ভাই অনেক ভয়ে আছি। কখন কার বাসায় গোলা এসে পড়ে বলা যায় না। পরিবারের সবাইকে নিয়ে চিন্তায় আছি।

চলমান অস্থিরতায় ঘুমধুম ছয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

এছাড়া সীমান্তে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসন।

তিনি জানান, সীমান্ত ঘেষা গ্রামের লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে আমাদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে বেশিরভাগ আতঙ্কিত মানুষ তাদের নিজ নিজ আত্মীয়ের বাসায় চলে গেছে।

এদিকে জিরো লাইনে গুলির খোসা ও মর্টার শেল পড়ে আছে উল্লেখ করে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আমার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ভাজবুনিয়া সীমান্ত পয়েন্টের বাসিন্দারা এখন চরম আতঙ্কে আছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছেন।

এদিকে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম জানান, সোমবার পর্যন্ত মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)’র ৯৫ জন সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে তুমব্রুর বিওপি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের নিরস্ত্র করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

GIPHY App Key not set. Please check settings